সরকারি চাকরি যেন সোনার হরিণ-Government job is like a golden deer
সরকারি চাকরি যেন সোনার হরিণ-Government job is like a golden deer
সরকারি চাকরি যেন আজ সোনার হরিণ। বাংলাদেশের মতো তৃতীয় বিশ্বের যে কোনো দেশেই একই অবস্থা। আপনি শুনে থাকবেন যে, আমাদের প্রতিবেশি দেশ ভারতে ঝাড়ুদারের চাকরির জন্য এমবিএ করা এক ছেলে আবেদন করেছেন। এ নিয়ে মিডিয়া পাড়ায় কিছুটা হইচই পড়েছিল।
সে যাগগে, আমাদের দেশে প্রতি বছর যতো সংখ্যক ছেলে মেয়ে পড়াশোনা শেষ করে বেকার জীবনে পা দিচ্ছেন, তার কাছাকাছিও কর্মসংস্থান তৈরি হচ্ছে না। ফলে বেকারত্বের হার বেড়েই চলছে।
এমন অবস্থায় সরকারি একটি যেকোনো পদেই হোক চাকরি সত্যিই যেন সোনার হরিণে পরিণত হয়েছে। প্রচুর পরিমান চাকরি প্রত্যাশি হওয়ায়, চাকরির বাজার যেন অধরা। সমস্ত পরিবারের দায়িত্ব কাধে নেওয়ার প্রত্যাশায় থাকা ছেলেটা দিনশেষে হতাশার বোঝা ঠিকই কাধে নিচ্ছে। এমতাবস্থায় একটি চাকরি যেন বেঁচে থাকার জন্য অক্সিজেন।
সরকারি চাকরি কেনো?
বেচে থাকার জন্য যেহেতু চাকরিকেই প্রাধান্য দিচ্ছি, তাই চাকরি করতেই হবে। এই ক্ষেত্রে সরকারি চাকরি পছন্দের তালিকার সবার উপরে থাকবে যে, চাকরির
সিকিউরিটি। হ্যা, সত্যিই প্রথম কারন হলো জব সিকিউরিটির কথা আর প্রত্যক্ষভাবে আপমার জনগনের সেবার সুযোগ। অন্য সকল চাকরিতেও জনগণের সেবা করা
যায়, তবে প্রাইভেট চাকরির তুলনায় সরকারি চাকরির সিকিউরিটি অবশ্যই বেশি। এছাড়াও সন্মান আর ভাতাদির কারণ তো আছেই। কে না চায়, আমার মৃত্যুর পর
আমার পরিবার, সন্তান যেন নূন্যতম একটা আমার রেখে যাওয়া সুবিধা পায়। সেটা যদি হয় নিশ্চিত, তবে তো কথাই নেই। সে কারণেই সম্ভবত সবার পছন্দের
তালিকার উপরে থাকে সরকারি চ্করিটা।
সরকারি চাকরির রকমফের:
এখন আসি সরকারি চাকরির হরেক রকম পদ পদবী নিয়ে। হ্যা, সরকারির বিভিন্ন দপ্তর অনুযায়ী, বিভিন্ন পদ পদবীতে বৈচিত্রময় সরকারি চাকরির বাজার।
সরকারির চাকরির প্রথম স্টেপ ধরা হয়ে থাকে বিসিএস ক্যাডার সার্ভিসের 26 টি ক্যাডার। এর মধ্যেও প্রশাসন, পররাষ্ট্র কিংবা পুলিশ ক্যাডার সবার পছন্দের তালিকার শীর্ষে থাকে।
যদিও এসবই শেষ কথা নয়। এর বাহিরেও হরেক রকম পদ পদবী আছে, যা এসবের চেয়ে কোনো অংশেই কম নয়।
এর বাহিরে তো অন্যন্য ডিপার্টমেন্ট এর দপ্তর প্রধান বা অফিসার, সরকারের সশস্ত্র বাহিনী, গোয়েন্দা বাহিনী, ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, মাঠ প্রশাসন সহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয় এর বিভিন্ন পদ পদবী।
সরকারি চাকরির প্রস্তুতি কিভাবে নেওয়া দরকার?
বাজারের সেরা চাকরিটার জন্য দরকার সেরা প্রস্তুতি। এ কথা তো স্বীকার করেনই। কথায় আছে, ওয়ার্ক হার্ড এর থেকে অনেক বেশি কার্যকর হলো ওয়ার্ক স্মার্ট, আর সর্বোচ্চ ফলাফলের জন্য দরকার সঠিক পদ্ধতিতে পরিকল্পিত পরিশ্রম করা।
কারণ, এটা মাথায় গেঁথে নিতে হবে যে, শর্টকাট পড়ে বেশিদূর যাওয়া সম্ভব নয়। তাই লক্ষ্য স্থির রেখে উপযুক্ত স্ট্র্যাটেজি অনুযায়ী কাজ করলেই মিলবে কাঙ্ক্ষিত সোনার হরিণের দেখা। সাথে ইতিবাচক মনোভাব থাকাটা খুব সহায়ক হবে, যেন মানসিক দিকটা শক্তিশালী থাকে।
আর পরিকল্পিত সাজেশন ভিত্তিক পড়াশোনা আপনাকে আপনার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পেীঁছতে সহায়তা করবে নিশ্চিতভাবে।
প্রাণ পণ চেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে:
সরকারি চাকরির যেহেতু মোটামোটি সবার কাম্য। তাই এর জন্য বাজারে কম্পিটিশন বেশি হবে এটাই স্বাভাবিক। তাই দুয়েকটি পরীক্ষা দিয়েই হতাশ হওয়া যাবেনা। লেগে থাকতে হবে নিয়ম মেনে। নিয়ম মেনেই
আপনাকে পড়াশোনার পাশাপাশি মনস্থির রাখতে হবে। আপনাকে ধৈয্যের এক মহা পরীক্ষা হয়তো দিতেই হবে। তবে আপনি নিশ্চিত ভাবেই আপনার লক্ষ্যে পেীছবেন। আপনার মঞ্জিল আপনি নির্ধারণ করেছেন, সুতরাং আপনিই তার
পথে নিজেকে নিয়ে যেতে হবে। প্রাণ পণ চেষ্টা অব্যাহত থাকবে আপনার। আপনি কাল বৈশাখি ঝড়েরর মাঝেও পাড়ারের মতো দৃঢ পায়ে দাড়িয়ে থাকতে হবে। সর্বোপরি স্রষ্ঠ্রার কাছে প্রার্থনায় মাথা নত করুন। কারণ, তিনিই আপনার এই
সময়ে সবচেয়ে ভাল বন্ধু ।
কীভাবে পড়বেন?
আপনি যেহেতু কঠিন এক পথের নবীন পথিক, তাই আপনাকে আপনার লক্ষ্যে পেীছার পথ নির্ধারণ করতে হবে। সাজানো পরিকল্পনা থাকতে হবে। দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা আপনার পথকে সহজ করে দিতে পারে। রুটিন মাফিক পড়াশোনা আপনার জন্য
খুবই দরকারি হবে। কখনোই কোন শর্টকার্ট প্রস্তুতি আপনার লক্ষ্যে পেীছে দিবে গ্যারান্টি নেই। সুতরাং আপনার জন্য একটি দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা আর রুটিন মাফিক পড়াশোনা দরকার। যতোটা সম্ভব, পারলে টোটালি সোসাল মিডিয়া হতে নিজেকে কিছুদিনের জন্য
দূরে সরিয়ে নিন। সোলাল মিডিয়া আপনার জীবনের অনেক কিছু কেড়ে নিতে পারে সহজেই।
যেভুল করা যাবে না:
আপনি জানেন যে, আপনি একটি কঠিন পথের নবীন পথিক। তাই এই কঠিন পথে চলতে শুরু করে আপনি কোনো ভুল সিদ্ধান্ত বা হটকারি সিদ্দান্ত নিতে পারেন না। আপনার জন্য কোনো শর্টকার্ট রাস্তা নেই। আপনার প্রস্তুতি হবে পূর্ণ প্রস্তুতি। দিনের পর দিন পরিশ্রম আর পরিশ্রমের মাধ্যমেই
আপনার মঞ্জিল আপনাকে ধরা দিবে। তার জন্য আপনাকে শুরু থেকে শুরু করতে হবে। বেসিক ঠিক করে নিয়ে পথ চলা শুরু হবে আপনার। আপনি কখনোই বাজারের বাজারী পরামর্শ নিতে যাবেন না।
বারবরা প্রস্তুতির ট্র্যাক পরিবর্তন করতে যাবেন না। ফলে আপনি আপনার মূল স্পিড হতে হারিয়ে যেতে পারেন।
অযথা সময় নষ্ট করা কারোর জন্যই শুভকর নয়। আপনার জন্য তো মোটেই নয়। আপনি ফাউ আড্ডা, বাজে বন্ধুর সঙ্গ দিতে যাবেন না। খুব বেশি খেলাধুলায় সময় দিবেন না। বিনোদনের প্রয়োজন অবশ্যই আছে, তাই বলে ক্যারিয়ার প্রস্তুতির সময় খুব বেশি বিনোদন আপনার জন্য হীতকর নাও হতে পারে।
তাই আপনি আপনার সময়কে কাজে লাগান। সুফল অবশ্যিই আপনার হাতের মুঠোয়।
শেষ কথা :
আজকের আলোচনা শেষ করার আগে যে কথা মনে করিয়ে দিতে চাই , তা হলো- আপনি হতাশ হবেন না। হতাশ হওয়া কোনো স্মার্ট লোকের কাজ নয়। প্রত্যেকটি হতাশ ব্যক্তি সফলতার একেবারে দ্বারপ্রান্তে থাকে। জাস্ট খানিক দূরেই আপনার সফলতার সিড়ি শুরু। আপনি আপনার লক্ষ্য স্থির রেখে পথ চলতে থাকুন। আর ভরসা করুন
স্রষ্ঠার উপর। তিনি অবশ্যই আপনার কঠোর পরিশ্রম আর প্রার্থনার জবাব দিবেন। আপনি শুধু মাত্র সময়ের অপেক্ষা আর নিজেকে যোগ্য বলে বিশ্বাস করুন।