সরকারি চাকরি আগে নাকি বিয়ে? || Married before the government job?
সরকারি চাকরি আগে নাকি বিয়ে? || Married before the government job?
সরকারি চাকরি আগে নাকি বিয়ে? এই প্রশ্নটা বর্তমান প্রেক্ষাপটে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রশ্ন। আজকাল আমাদের সমাজে একটা ট্রেন্ড চালু করা হয়েছে যে, আগে নিজের পায়ে দাঁড়াও, তারপর বিয়ের চিন্তা করো। নিজের পায়ে দাঁড়ানো মানে প্রতিষ্ঠা হওয়া। এই প্রতিষ্টা হওয়ার আরেক অর্থ - চাকরি পাওয়া।
চাকরির প্রসঙ্গ আসলে তো সবার আগে সরকারি চাকরি। এর বাহিরে যেনো কোন কথাই নেই। অন্য কোনো চাকরি যেন চাকরিই নয়। অন্য পেশা তো দূর কী বাত হে।
চাকরি মানেই যেনো সরকারি। দুনিয়ায় যেনো আর কোন পেশা নেই। আর কোনো রাস্তা নেই। কী আজব এক অন্ধ ঘোড়ার পিঠে চড়েছি আমরা।
সমস্যাটা কোথায়?
হ্যাঁ, এটা দারুন প্রশ্ন যে, এতে সমস্যাটা কোথায়?
সমস্যাটা বহুমাত্রিক। আপনি যদি ধর্মীয় বিশ্বাসের সাথে জীবন যাপন করেন তবে আপনি জানেন যে, রাসুলুল্লাহ সাঃ বালেগ হবার পর যতোটা সম্ভব তাড়াতাড়ি বিয়ে করতে বলেছেন। এতে করে বহুবিধ উপকার হয়। মেডিকেল সাইন্সও এ ব্যাপারে আমাদের উৎসাহিত করে থাকে।
আমরা জানি যে, উপযুক্ত বয়সে বিয়ে করা খিবই স্বাস্থ্যসম্মত। এতে করে পাপাচার থেকেও নফস্কে রক্ষা করা সহজ থেকে সহজতর হয়। সমাজে অপরাধবোধ বিশেষ করে যৌন অপরাধ কমে আসে। ফলে সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠায় সহায়ক হয়ে থাকে। ব্যক্তি জীবন হয়ে উঠে সুন্দর ও প্রশান্তিময়।
আর যদি উপযুক্ত বয়সে বিয়ে না হয়- করা না যায় তবে ব্যক্তি চরিত্র নষ্ট হবার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। সাথে সামাজিক অপরাধ বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনাও বহুগুণে বেড়ে যায়। ব্যক্তিস্বাস্থ্য ও সমাজ নষ্ট হয়ে মানুষ জগন্য পাপাচারে লিপ্ত হতে পারে।
অন্যদিকে লেট মেরিজের ফলে নিজের স্ত্রী - সন্তানদের উপর নিজের কন্ট্রোল কমে যায়, ফলে পরিবারে অশান্তি তৈরি হতে পারে। এমনকি অনেক ক্ষেত্রে পারিবারিক বন্ধনও ছিন্ন হয়ে একটি অশান্ত পরিবেশ তৈরি হতে পারে। যা আজকাল আমাদের সমাজে অহরহ হচ্ছে।
বিয়ে করলে খাওয়াবো কী?
আহারে বোকার প্রশ্ন। সত্যিই এটি বোকার প্রশ্ন। বর্তমানে এমন কী কোনো ঘয়না আছে যে, কেউ না খেয়ে আছে?
সবচেয়ে বড়ো কথা হলো - আমাদের সবাইকে স্রষ্টা অবশ্যই সৃষ্টির সূচনালগ্নেই রিজিকের বন্দোবস্ত করেই পাঠিয়েছেন। এই বিশবাস অবশ্য করা উচিৎ। এতে করে আপনার ঘাড়েরর বোঝা হালকা হবে, আপনি মানসিকভাবে স্থিরতা পাবেন। আপনার জীবনবোধ হবে উন্নত। আপনি আরো শক্তিশালী হবেন। আপনার স্থীরতা আরও মজবুত হবে। আপনার দৃঢ়তা আরও বৃদ্ধি পাবে। আপনি হয়ে উঠবেন লক্ষ্যে অনড়। আপনার সফলতা অর্জনের পথ হবে আরো মসৃণ।
সরকারি চাকরির নিশ্চয়তা কি?
আমি যদি আপনাকে প্রশ্ন করি - আপনি যে সরকারি চাকরি পাবেন, এর নিশ্চয়তা কি? কি উত্তর দিতে পারবেন? আপনার উত্তর হবে শুধুই আশাব্যঞ্জক ; নিশ্চয়তার সাথে হ্যাবোধক কোনো উত্তরই আপনি দিতে লারবেন না। সত্যিই পারবেন না। সুতরাং আপনার সরকারি চাকরির কোনো নিশ্চয়তা নেই, তবুও আপনি এক আশার আলোর দিকে দৌড়ে চলছেন অহর্নিশ।
আমি আপনাকে হতাশ করছিনা। আপনার আশার আলো ঝলমলিয়ে উঠুক এটা আমি সর্বান্তকরণে চাই। তবে আপনি শুধু একবার নিজের বিবেক কাজে লাগিয়ে চিন্তা করুনঃ কতোদিনের জীবন নিয়ে এসেছেন? কেন তবে এই ছোট্ট জীবনটাকে নষ্ট করে দিচ্ছেন?
তবে করনীয় কি?
সরকারি চাকরি নাকি বিয়ে? আগে কোনটা?
এমন প্রশ্ন সামনে আসলে অবশ্যই আপনি পরিণত বয়সের হলে আগে বিয়ে করুন। সরকারি চাকরির তো নিশ্চয়তা নেই। সময়ও আপনার জানা নেই। তাই সময় হলে বিয়ে করা উচিৎ। বিয়ে তো আপিনার পড়াশোনা বা চাকরির প্রস্তুতি কোনোটাই আটকিয়ে দিবে না। দুনিয়ায় এমন হাজারো নজির আছে যে, বিয়ের পরই জীবনের চরম সফলতা অর্জিত হয়েছে। আপনার বেলায়ও হতে পারে, যদি আপনি উপযুক্ত হয়ে থাকেন।
বিয়ে আর সরকারি চাকরি কখনোই পরস্পর শত্রুতার সম্পর্কে উপনিত নয়। আপনি বরং বিয়ের পরই জীবনের চরম সফলতা অর্জন করতে পারেন। তার আগে নয়। তাই সরকারি চাকরির আশায় বসে না থেকে বিয়ে করুন। আল্লাহ অবশ্যই আপনার মঞ্জিল সহজ করে দিবেন। আপনি হবেন একজন সফল মানুষ।
শেষকথাঃ
সরকারি চাকরি আর বিয়ে যদি সামনাসামনি হয়, বা যেটা আগে সামনে আসে সেটাই করুন। বিয়েকেই প্রাধান্য দিন। আপনার ব্যক্তিজীবন, পারিবারিক ও সামাজিক জীবন অনেক বেশি সাফল্য মণ্ডিত হবে। আপনি জীবন খুঁজে পাবেন। পাবেন জীবনের অনাবিল সুখ। সুতরাং সরকারি চাকরির পিছনে পরে জীবন যৌবন সব হারিয়ে ফেলা কেবলমাত্র বোকা লোকদের কাজই হতে পারে। এটা কোনভাবেই বুদ্ধিমান লোকদের কাজ হতে পারে না।
আসুন, আমরা জীবনের পথকে বেছে নিই; আলোর পথকে আগলে নিই; জীবনকে রোবটে পরিণত না করি।